বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

টিকা পেতে নিবন্ধন শুরু বুধবার

  •    
  • ২৫ জানুয়ারি, ২০২১ ১৯:১৩

যাদের স্মার্ট ফোন নেই বা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে জানেন না, তারা যেকোনো ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকে নিবন্ধন করতে পারবেন।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা পেতে নিবন্ধনের জন্য সরকারের আইসিটি বিভাগের তৈরি করা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ‘সুরক্ষা’ উন্মুক্ত করা হচ্ছে বুধবার। এদিন থেকে শুরু হবে নিবন্ধন কার্যক্রম।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।

তিনি বলেন, ‘এই ব্যবস্থাপনায় একটি ওয়েব পোর্টাল ও মোবাইল এপ্লিকেশনও তৈরি করা হয়েছে। করোনার টিকা নিতে ইচ্ছুকরা এই ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে পারবেন। পাশাপাশি, টিকা সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম এই সফটওয়্যার দিয়ে করতে পারবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।’

প্রতিমন্ত্রী জানান, সফটওয়্যারটি বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলে পরীক্ষা করেছে। এটির সঙ্গে জাতীয় তথ্য কেন্দ্রের সংযোগ স্থাপন করা হবে। যাতে করে নাগরিকদের তথ্য যাচাই করা যায়।

জুনায়েদ আহমেদ বলেন, ‘যারা টিকা নিতে ইচ্ছুক তারা প্রথমে সুরক্ষা ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে নিবন্ধন করবেন। এজন্য তাদের একটি নিবন্ধন প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। টিকা প্রদান সংক্রান্ত সব তথ্য এই পোর্টালের মাধ্যমেই জানা যাবে।’

ওয়েব পোর্টাল বা মোবাইল এপ্লিকেশন কোনোটিই এখনও উন্মুক্ত হয়নি জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এখন আমরা ডেমো ভার্সন নিয়ে কাজ করছি। প্রধানমন্ত্রী যেদিন টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন, সেদিনই এই ওয়েব পোর্টালটি উন্মুক্ত করা হবে।

‘পরবর্তীতে যদি মোবাইল অ্যাপের প্রয়োজনীয়তা দেখা যায়, সেজন্য আমরা একটি এন্ড্রয়েড অ্যাপ বানিয়ে রেখেছি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যখন চাইবে তখনই এটি উন্মুক্ত করে দেয়া যাবে। তবে আইওএস ব্যবহারকারীরা এখনই কোনো অ্যাপ পাবেন না। আমরা আইফোন ব্যবহারকারীদের জন্যও অ্যাপ তৈরির কাজ চলমান রেখেছি।’

টিকা পেতে নিবন্ধনের জন্য সরকারের আইসিটি বিভাগের তৈরি করা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ‘সুরক্ষা’র বিস্তারিত তুলে ধরেন তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। ছবি: নিউজবাংলা

যে প্রক্রিয়ায় নিবন্ধন

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সুরক্ষায় নিবন্ধন করতে লাগবে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদ ও জন্ম তারিখ।

নিবন্ধনের জন্য যে ফরম পুরণ করতে হবে তাতে প্রয়োজন হবে মোবাইল ফোন নম্বর, শারীরিক কোনো জটিলতার তথ্য ও আগ্রহী ব্যক্তির বয়স। নিবন্ধন হয়ে গেলে টিকা প্রদানের সম্ভাব্য তারিখ জানানো হবে এসএমএসের মাধ্যমে।

তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, ‘মুলত টিকা নেয়ার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঠিক করে দেয়া ১৭ ক্যাটাগরির মানুষ অগ্রাধিকার পাবেন।

‘যাদের স্মার্ট ফোন নেই বা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে জানেন না, তারা যেকোনো ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকে নিবন্ধন করতে পারবেন। ডিজিটাল সেন্টারগুলোকে এ সংক্রান্ত সব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘একটি এনআইডি বা মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে শুধুমাত্র একজন ব্যক্তিই নিবন্ধন করতে পারবেন। মুলত তিন ধাপে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরেই একজন ব্যক্তি টিকার জন্য নিবন্ধন পাবেন।’

অতিরিক্ত ব্যবহারকারীর চাপে যেন ওয়েব পোর্টালটি বসে না পড়ে এ জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানান পলক।

তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক প্রস্তুতি রয়েছে যারা করোনায় ফ্রন্টলাইনার তারাই টিকা পাবেন। এরপর বয়স্ক, যাদের বয়স ৫৫ বছরের বেশি তারা টিকা পাবেন। সে হিসেবে দেশে এখন বয়স্ক মানুষের সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার কোটি।

‘ন্যাশনাল ডেটা সেন্টারের সহযোগীতায় মুলত নিবন্ধনকারীদের পরিচয় নিশ্চিত করা হবে। নির্বাচন কমিশন এক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা করছে। আমরা এর সক্ষমতা সম্প্রতি বৃদ্ধি করেছি। এক সঙ্গে পাঁচশজন আগ্রহী বর্তমান প্রক্রিয়ায় নিবন্ধন করতে পারবেন।’

তিনি আরও জানান, এই পোর্টালে সাইবার আক্রমণ প্রতিহত করারও ব্যবস্থা আছে। এরপরেও কোনো সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিক সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে।

টিকাগুলো রাখা হয়েছে টঙ্গীতে বেক্সিমকো ফার্মার গুদামে। ছবি: নিউজবাংলা

‘সুরক্ষার বাইরে টিকা নয়’

‘সুরক্ষা’ ওয়েবপোর্টালে নিবন্ধিত না করোনার টিকা পাওয়া যাবে না বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম।

তিনি বলেন, ‘সুরক্ষার বাহিরে কোনো টিকা কাউকে দেয়া হবে না। মুলত টিকা সংক্রান্ত সব তথ্য ভবিষ্যতে যেন বিশ্লেষণ করা যায় তাই এ সিদ্ধান্ত।

‘ভবিষ্যতেও যখন দেশে কোনো টিকাদান কর্মসূচি হবে তখনও এই পদ্ধতিটিতে মডেল হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এ কারণেই এর বাহিরে টিকা না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

কোনো ব্যক্তি নির্দিষ্ট তারিখে টিকাদান কেন্দ্রে উপস্থিত হতে না পারলে কি হবে জানতে চাইলে খুরশীদ আলম বলেন, ‘কারও টিকার তারিখ বা কেন্দ্র পরিবর্তনের বিষয়টিকে এনকারেজ করা হচ্ছে না। এর কারণ, কোনো কেন্দ্রে কি পরিমাণ নিবন্ধন রয়েছে তার ওপর নির্ভর করেই টিকার ডোজ পাঠানো হবে।

‘এখন কেউ যদি নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হন তাহলে অনেক ভ্যাকসিন নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। এটি হতে দেয়া উচিত হবে না।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, সাধারণত প্রথম ডোজের ৮ থেকে ১২ সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজ নিতে বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে একজন ব্যাক্তি প্রথম ডোজ নেয়ার পর লম্বা সময় পাচ্ছেন। তিনি যে কেন্দ্র থেকে টিকা নিয়েছেন সেখান থেকেই দ্বিতীয় ডোজটিও গ্রহণ করবেন।

তবে কেউ প্রথম ডোজের দিন টিকা নিতে না পারলে সমস্যা নেই বলেও জানান খুরশীদ। বলেন, ‘তবে দ্বিতীয় ডোজের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট তারিখে উপস্থিত না হতে পারলে সমস্যা।’

টিকাদান আপাতত নির্দিষ্ট হাসপাতালের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন পাচ্ছি সবচেয়ে কম দামে।’

ভারতের পর বাংলাদেশই সবচেয়ে কম দামে করোনার টিকা কিনতে পেরেছে বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস। সংবাদ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি বলেন, ‘দেশে দেয়ার জন্য টিকার ৭০ লাখ ডোজ প্রস্তুত।

‘দেশে এখন পর্যন্ত ৫ লাখের মতো মানুষ কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন। সে হিসেবে বলাই যায় বিপুল পরিমাণ টিকা এই মুহুর্তে আমাদের হাতে রয়েছে।’

কম দামে করোনার টিকা কেনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সময় মতো তৎপরতা চালানোর জন্যই এক কম দামে টিকা পাওয়া গেছে।’

এ বিভাগের আরো খবর